শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মন্থর নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। কয়েকদিন আগেই এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেলের নিচে নেমে গিয়েছিল, তাই ইউরোর দরপতন প্রত্যাশিত ছিল। শুক্রবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট ছিল না, তাই মার্কেটে স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা বিরাজ করছে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সাধারণভাবে এই পেয়ারের মূল্যের স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়েছে। মার্কেটের ট্রেডাররা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত "মূল্যায়ন" করেছে এবং এখন আর অন্ধের মতো ডলার বিক্রি করছে না। বুধবার সন্ধ্যায় জেরোম পাওয়েল বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে কোনো সমস্যা নেই। এটি মার্কেটের ট্রেডারদের কিছুটা শান্ত করেছে এবং ফেড পূর্ববর্তী হকিশ বা কঠোর অবস্থান ধরে রেখেছে, যা ২০২৫ সালে দুইবারের বেশি সুদের হার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয় না। যদিও বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে যেতে পারে, একই কথা যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মূলত, আমরা আবেগের কারণে ডলারের বিক্রয় হতে দেখেছি, এটি কোনো নির্দিষ্ট মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণে ঘটেনি। এখন একটি কারেকশন প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার একাধিক সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে এই পেয়ারের মূল্যের দৈনিক মুভমেন্ট দুর্বল ছিল। এখন এই পেয়ারের মূল্য 1.0845–1.0851 এরিয়া থেকে 1.0859–1.0861-এ গিয়েছে। এর আগে শুক্রবারের বাই এবং সেল সিগন্যাল উভয়ই কার্যকর করা গিয়েছিল। বাই সিগন্যালটি ভুল ছিল, কিন্তু সেল সিগন্যালটি লাভজনক ছিল, কারণ মূল্য নিকটতম টার্গেটে পৌঁছেছিল। ফলে, নতুন ট্রেডাররা শুক্রবার লোকসানের সম্মুখীন না হলেও, এমন দুর্বল মুভমেন্ট থেকে লাভ করা বেশ কঠিন ছিল।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, তবে এটি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা এখন কমছে। যেহেতু মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন করছে, আমরা এখনো দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ধারাবাহিকভাবে শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক আধিপত্যের দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে ডলারের মূল্যকে করছেন। মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো রাজনীতি ও ভূ-রাজনৈতিক কারণের ছায়ায় ঢাকা পড়ে আছে, তাই আপাতত ডলারের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধির আশা করা যাচ্ছে না।
সোমবার ইউরোর দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ অনেকদিন পর ট্রেডাররা মৌলিক বিশ্লেষণের প্রতি সঠিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে (ফেডের বৈঠক), এবং টেকনিক্যালি, এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেক করে নিচের দিকে গেছে। ডলার অতিরিক্ত বিক্রি করা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত ভিত্তি ছাড়াই এটির দরপতন হয়েছে। তাই এখন ডলারের মূল্যের কারেকশনের সম্ভাবনা রয়েছে।
৫ মিনিটের চার্টে নিম্নোক্ত লেভেলগুলোর দিকে দৃষ্টি রাখুন: 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1048। সোমবার জার্মানি, ইউরোজোন এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরিষেবা ও উৎপাদন খাতের মার্চ মাসের প্রাথমিক PMI প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এগুলো মাঝারি গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন, তবে এগুলোর প্রভাবে মার্কেটে কিছুটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।